শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪২ অপরাহ্ন
নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
মেহেদী হাসান:
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) বাস চালক ও হেল্পারের বিরুদ্ধে অভিনব কায়দায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে তেল চুরির অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের বহনকারী সাদা বাসের (মধুমতি) চালক মোহাম্মদ ইলিয়াস কাঞ্চন (৩০) ও তার হেলপার (সহযোগী) মো. আলাউদ্দিন (৩৫) এর যৌথভাবে তেল চুরির একটি ফুটেজ এই প্রতিবেদকের কাছে আসে।
অনুসন্ধান করে জানা যায়, বুধবার (১২ নভেম্বর, ২০২৫) নোয়াখালীর জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অফিসের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসের (বাস নম্বর – নোয়াখালী – স, ১১০০০২) তেলের ট্যাংকার থেকে অভিযুক্ত দুইজনকে পাইপের সাহায্যে বালতিতে তেল নিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ধার্য করা পাম্প থেকে তেল নিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়ে পাইপের সাহায্যে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। তবে পরিবহন পুলের একাধিক সূত্র মতে ধারণা করা হচ্ছে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির বাহিরেও এর সাথে একটি সিন্ডিকেট জড়িত।
এ নিয়ে খোঁজ নিতে গেলে জানা যায়, সাধারণত একটি বাসের ট্যাংকারে ২৫০-৩০০ লিটার তেল ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চুক্তিবদ্ধ “নোয়াখালী পাম্প স্টেশন” থেকে প্রয়োজনীয় তেল থেকে ৫০-৮০ লিটার কম ডিজেল নিত এই চালক ও তার সহযোগী কিন্তু বিলে পুরো ২৫০ লিটার ডিজেলের পরিমাণ উল্লেখ করত। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন শাখা পাম্প স্টেশনকে বিল পরিশোধ করলে সেখান থেকে নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নিতেন এই চক্রের লোকজন ও পাম্প স্টেশনের সদস্যরা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই বিষয় জানার পর ঐ পাম্প স্টেশন থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দেয়।
এমন ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সোনাপুর পাম্প স্টেশন (দত্তের হাট, সদর, নোয়াখালী) থেকে তেল কেনার চুক্তি করে। সেখান থেকে পূর্বের ন্যায় তেল চুরি করতে না পারায় বাসের ফুল ট্যাংক পরিপূর্ণ করে অন্য কোন জায়গায় বাস দাঁড় করিয়ে বাসের ডিজেলের ট্যাংকার থেকে পাইপ বা অন্য কোন উপায়ে বের করে স্থানীয় লোকজন বা পাম্প স্টেশনে বিক্রি করে দিত এই চক্র।
তেল চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে বাস চালক ইলিয়াস কাঞ্চন প্রথমে অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে নিজের দায় স্বীকার করেন। এছাড়াও তিনি বলেন, আমি আগে এই রকম কোন কাজ তিনি করিনি। আমার হেলপারের (মো. আলাউদ্দিন) পরামর্শে আমি এসব কাজ করেছি। ”
এ নিয়ে বাসের হেলপার আলাউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ফোনে এসব বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।
তেল চুরি চক্রের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিবহন পুলের পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ড. কাওসার হোসেন বলেন, “অভিযোগটি আমরা শুনেছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সেটি তদন্ত করে যারা যারা জড়িত থাকবে তাদের সবাইকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। এছাড়াও এই দুইজনের বাহিরে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলেও আমরা সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করব। ”
নোবিপ্রবির রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত) জনাব তামজীদ হোসাইন চৌধুরী বলেন, “আমরা এ বিষয়ে এখনো কিছু শুনিনি। আপনারা যেহেতু বলেছেন আমরা তদন্ত করে এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিব।”
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।